বিশ্বকাপের আগে কি জেলে যাবেন নেমার? কার জন্যে তাঁকে ছুটতে হচ্ছে স্পেনের আদালতে?
ক’দিন পরেই ব্রাজিলের জার্সি গায়ে বিশ্বকাপ খেলতে নামবেন। গোটা দেশ তাকিয়ে আছে তাঁর দিকে। ২০ বছর পর ট্রফি কি তিনি এনে দিতে পারবেন? নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস জুনিয়র জানেন না। দেশবাসীকে দরাজ গলায় তিনি ভরসাও দিতে পারছেন না। কারণ বিশ্বকাপের এক মাস আগে মাঠের বদলে তাঁকে হাজিরা দিতে হচ্ছে বার্সেলোনার আদালতে। নেমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, স্যান্টোস থেকে বার্সেলোনায় যাওয়ার সময় যে চুক্তি হয়েছিল, তাতে প্রতারণা এবং বিপুল পরিমাণে আর্থিক তছরূপ জড়িয়ে রয়েছে। স্যান্টোসে থাকাকালীন নেমারের আর্থিক স্বত্ব যে সংস্থার হাতে ছিল, তার মালিক প্রাপ্য অর্থ ফেরত পাওয়ার আবেদন জানিয়ে মামলা করেছেন। সেই মামলার শুনানিতেই হাজিরা দিতে হচ্ছে নেমারকে।
অনেক দিন আগেই বার্সেলোনা ছেড়ে ফ্রান্সের ক্লাব প্যারিস সঁ জরমঁতে চলে গিয়েছেন নেমার। বিশ্ব ফুটবলে নিজেকে আরও প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এখনও তা বাস্তবায়িত হয়নি। পিএসজি-র হয়ে যে দিন গোল করে উৎসব করলেন, পরের দিনই স্যুট-টাই পরে তাঁকে হাজির হতে হল বার্সেলোনার আদালতে। নেমারকে আদালতে টেনে আনার পিছনে রয়েছেন একজনই, দেলসির সোন্দা।
কে এই সোন্দা?
সংক্ষেপে বলতে গেলে, ব্রাজিলের এক বিরাট সুপারমার্কেট চেনের মালিক। সেই সঙ্গে তাঁর সংস্থা ডিআইএস ব্রাজিলের উঠতি ফুটবলারদের আর্থিক স্বত্বের মালিক। তাঁর সংস্থা ব্রাজিলে বিভিন্ন উঠতি এবং প্রতিভাবান ফুটবলার দেখলেই তাঁদের সঙ্গে আর্থিক স্বত্বের চুক্তি করে নেয়। সেই ফুটবলার সোন্দার সংস্থা থেকে বড় অঙ্কের অর্থ পান। পরে তাঁকে অন্য ক্লাবে বিক্রি করে দেওয়া হলে ডিআইএস-ও নিজেদের আর্থিক স্বত্ব সংশ্লিষ্ট ক্লাবের কাছে বিক্রি করে মোটা মুনাফা রোজগার করে। তবে সোন্দার দাবি, নেমারের ক্ষেত্রে চুক্তির নিয়ম মানা হয়নি। ফলে তাঁর সংস্থার বড় ক্ষতি হয়েছে। তিনি টাকা ফেরত চান বটেই। তবে সোন্দার কাছে অর্থই মূল কথা নয়। তিনি চান সঠিক বিচার। বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার এবং বার্সেলোনা কী ভাবে তাঁর সংস্থাকে ফাঁকি দিয়ে মোটা মুনাফা করল, সেই সত্য প্রকাশ্যে আনার দাবি করেছেন। আদালতের এই ‘লড়াই’ তাঁর কাছে অনেক বেশি আত্মসম্মানের। নেমার এবং তাঁর পরিবারকে যদি জেলে যেতে হয় এবং বিশ্বকাপের আগে যদি ব্রাজিল ধাক্কাও খায়, তাতেও সোন্দা পরোয়া করবেন না।
No comments:
Post a Comment